ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা

আপনি কি ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করতে চাচ্ছেন। আজ আলোচনা করব ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্বন্ধে। আপনি যদি ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বিস্তারিত ও পরিপূর্ণভাবে পেতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য।
ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা

তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্পর্কে। ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোষ্ট সূচিপত্র: ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা

ভূমিকা

ঠাকুরগাঁও জেলা সম্বন্ধে জানার আগে আমাদের জানতে হবে ঠাকুরগাঁও নামটি কিভাবে এলো বা ঠাকুরগাঁও নাম হওয়ার আগে এই অঞ্চলের নাম কি ছিল। ঠাকুর অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের সংখ্যাধিক্যের কারণে স্থানটির নাম ঠাকুরগাঁও হয়েছে। তবে ঠাকুরগাঁও এর পূর্ব নাম ছিল নিশ্চিন্তপুর। ১৭৯৩ সালে ঠাকুরগ্রাম অভিভক্ত দিনাজপুর জেলার থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অধীনে ছয়টি থানা ছিল। এগুলো হলো: ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, হরিপুর ও আটোয়ারী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঠাকুরগাঁও এর অনেক অবদান রয়েছে। কিন্তু তা জানতে হলে প্রথমে আমাদের জানতে হবে ঠাকুরগাঁও কোন সেক্টরের অধীনে ছিল। তাই আজ ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার বিবরণ পেতে চলেছেন আজকের আর্টিকেলে। এমনকি বর্তমান সময়ে ঠাকুরগাঁও জেলার ইউনিয়ন কয়টি এবং ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত কিছু বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানতে চলেছেন।

ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা

মোহাম্মদ আলী: ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় সর্ব প্রথমে যার নাম রয়েছে তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী। মোহাম্মদ আলী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রথম শহীদ। মোহাম্মদ আলীর জন্ম তারিখ অজানা থাকলেও তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ। তিনি পেশায় ছিলেন একজন রিক্সা চালক। ১৯৭১ সালে ঠাকুরগাঁও ছিল দিনাজপুর জেলার একটি মহকুমা। পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচার ও নিপীড়নের কারণে সারা বাংলার মতো প্রত্যন্ত এই জনপদেও চাপা খোভ বিরাজ করতে লাগলো।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সকাল থেকে রেডিওতে ঘনঘন প্রচার করা হচ্ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ সরাসরি ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দান থেকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মঞ্চে ওঠার আগেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সরাসরি প্রচার বন্ধ করে দেয়। ৮ মার্চ বঙ্গবন্ধুর সমগ্র ভাষণের রেকর্ড যখন রেডিওতে প্রচারিত হচ্ছিল তখন বিক্ষবে গর্জে ওঠে সারা দেশ। তখন সারাদেশের মতো ঠাকুরগাঁও মহাকুমাতেও পাকিস্তানি শাসকব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।
২৫ শে মার্চ গভীর রাতে ঢাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ খবর পৌঁছার পর ২৭ মার্চ ঠাকুরগাঁও শহরে মুক্তি কামে জনতার এক বিশাল মিছিল বের হয়। মিছিলের উদ্দেশ্য ছিল ইপিআর ক্যাম্পে গিয়ে বাঙালি ইপিআরদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করবে। ঠাকুরগাঁও শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা থেকে দক্ষিনে কালীবাড়ি মোড়ের কাছে অগ্রসর হতে মিছিলের সামনে এসে হাজির হয় পাক হানাদার বাহিনীর এক জীপ।

জীপ থেকে নেমে আসে মেজর মোহাম্মদ হোসেন ও ক্যাপ্টেন নাবিদ আলম। তারা মিছিল কারীদের জিজ্ঞাসা করল তোমরা কি চাও? মিছিল থেকে অসীম সাহসী অকুতোভয় বলিষ্ঠ দেহী মধ্য বয়সি মোহাম্মদ আলী সামনে এসে চিৎকার করে স্লোগান দেয় জয় বাংলা স্বাধীন বাংলা। মোহাম্মদ আলী এই স্লোগান দিতেই মেজর মোহাম্মদ হোসাইন এর ইশারায় হানাদারের রাইফেল গর্জে ওঠে। মুহূর্তেই চিৎকার দিয়ে রাস্তায় লুটে পরে মোহাম্মদ আলী।

মিছিলের বাকি লোক ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে ছুটে পালিয়ে যায়। ঠাকুরগাঁও শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তার ট্রাফিক আইনল্যান্ড থেকে দক্ষিণ দিকে যে রাস্তাটি কালীবাড়ি হয়ে সত্যপুর ব্রিজ পর্যন্ত গিয়ে মহাসড়কে মিশে গেছে সেটি বর্তমানে শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়ক নামে পরিচিত। স্বাধীনতার পূর্বে এই শরকটি সাউথ সার্কুলার রোড নামে পরিচিত ছিল। ঠাকুরগাঁও শহরের রাজনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, ও সংস্কৃতির সাথে এই সড়কটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

ঠাকুরগাঁও কোন সেক্টরের অধীনে ছিল

ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে আরেকটি বিষয়ে তথ্য অর্জন করা জরুরী হয়ে যায় সেটা হল ঠাকুরগাঁও কোন সেক্টরের অধীনে ছিল। এই সেক্টরকেও ছয়টি সাব সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও মহাকুমা এবং ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী অঞ্চল ব্যতীত সমগ্র রংপুর নিয়ে গঠিত হয় সেক্টর নাম্বার ৬। মেজর মীর শওকত আলী ছিলেন সেক্টর কমান্ড। সমগ্র রংপুর জেলা ও দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহাকুমা ৬ নাম্বার সেক্টরের অধীনে ছিল। এই সেক্টর গঠিত হয় রংপুর ও দিনাজপুরের ইপিআর বাহিনী নিয়ে।

ঠাকুরগাঁও জেলার সবচেয়ে বড় নদী

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় কোনো না কোনো নদীর জন্য সুপরিচিত। যেমন: রাজশাহী পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত, যশোর কপোতাক্ষ নদীর তীরে অবস্থিত, ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত, খুলনা ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত তেমনি ঠাকুরগাঁও এর সেনুয়া নদী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও জেলার একটি নদী। এই নদীটির দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার, গড়প্রস্থ ২৩ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। সেনুয়া নদী ঠাকুরগাঁও জেলার সবচেয়ে বড় নদী। তবে ঠাকুরগাঁও টেঙ্গন নদীর তীরে অবস্থিত।

ঠাকুরগাঁও কোন জেলায় অবস্থিত

ঠাকুরগাঁও সম্বন্ধে যেকোনো তথ্য অনুসন্ধান যেমন: ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বা যেকোনো তথ্য অনুসন্ধানের পূর্বে আমাদের জানতে হবে ঠাকুরগাঁও কোন জেলায় অবস্থিত। ঠাকুরগাঁও বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিম দিকের একটি জেলা। এটি রংপুর বিভাগের একটি অংশ। এর পশ্চিমে ভারত সীমান্ত রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও কেন নামকরণ করা হয়

ঠাকুরগাঁও শহর সম্বন্ধে তথ্য অনুসন্ধান যেমন ঠাকুরগাঁও জেলার সবচেয়ে বড় নদী বা ঠাকুরগাঁও কোন জেলায় অবস্থিত এর সম্বন্ধে অনুসন্ধানের পূর্বে আমাদের জানতে হবে ঠাকুরগাঁও কেন নামকরণ করা হয়। আবার আমরা অনেক সময় এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে চাই ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্বন্ধে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি স্মরণীয় ও মর্ম বেদনাদায়ক ইতিহাস যার সম্বন্ধে জানার আগ্রহ নেই এমন মানুষ খুব কমই আছে।
১৮০০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে টঙ্গন, শুক, কুলকি, পাথরাজ, ও ঢেপা বিধৌত এই জনপদের একটি ঠাকুর পরিবারের উদ্যোগে বর্তমান পৌরসভা এলাকার কাছাকাছি কোন একটি স্থানে থানা স্থাপিত হয়। তাদের নাম অনুসারে থানা টির নাম রাখা হয় ঠাকুরগাঁও থানা। মতামত্নরে ঠাকুর অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের সংখ্যাধিক্যের কারণে স্থানটির নাম ঠাকুরগাঁও হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কি জন্য বিখ্যাত

ঠাকুরগাঁও জেলা কি জন্য বিখ্যাত এ বিষয়ে অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকতে পারে। ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বা ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্বন্ধে যেমন অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে তেমনি ঠাকুরগাঁও জেলা কি জন্য বিখ্যাত বা ঠাকুরগাঁও জেলার সবচেয়ে বড় নদী এবং ঠাকুরগাঁও কেন নামকরণ করা হয় এই সমস্ত বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা ও বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের আগ্রহ আমাদের অনেকের মাঝেই বিদ্যমান।
ঠাকুরগাঁও জেলায় বেশ কিছু শিল্প কারখানা রয়েছে যার জন্য ঠাকুরগাঁওকে বিখ্যাত বলে আখ্যায়িত করা হয়। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঠাকুরগাঁও চিনিকল অন্যতম। এছাড়াও ঠাকুরগাঁয়ে রয়েছে বেসিক শিল্প নগরী সেখানে কিছু কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিস্কুট ফ্যাক্টরী, সাবান ফ্যাক্টরী, প্লাস্টিক কারখানা, ফ্লাওয়ার মিল এবং জুট মিল। এসব মিল বা কারখানা গুলো ঠাকুরগাঁও শহরকে অন্যতম করে তুলেছে।

শেষ কথা

উপরিউক্ত আলোচনায় আজ আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি ঠাকুরগাঁও কোন জেলায় অবস্থিত, ঠাকুরগাঁও কেন নামকরণ করা হয়, ঠাকুরগাঁও জেলা কি জন্য বিখ্যাত ও ঠাকুরগাঁও কোন সেক্টরের অধীনে ছিল এই সমস্ত বিষয় সম্বন্ধে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে ঠাকুরগাঁও শহর সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন।

আজকের আর্টিকেলের কোন বিষয়টি আপনার ভালো লেগেছে আপনি কতটুকু তথ্য অর্জন করতে পেরেছেন আপনার মূল্যবান মতামত অবশ্যই শেয়ার করুন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 26181

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url